Posts

স্বস্তিকা কি যে অস্বস্তি! ।। আরাফাত জুয়েল ।। দেবস্মিতা সাহা

Image
 গল্পটা আসলেই বেশ খানিকটা অস্বস্তিকর বটে, যদিও সিচুয়েশনটা এর আগেও আমরা অন্যান্য অনেক সিনেমাটোগ্রাফিতে পরিলক্ষিত করেছি, তবে মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের "স্বস্তিকা কি যে অস্বস্তি" সৃষ্টিকর্মটি যে সেসব থেকে অনেক বেশি আলাদা এবং স্বকীয়, তা দর্শক দেখলেই বুঝতে পারবে৷ এই গল্পের মূল চরিত্রগুলো হলো রিফাত সাহেব (আফজাল) এবং তার প্রাক্তন স্ত্রী স্বস্তিকা (ইলোরা), অন্তু (অপূর্ব) এবং সপ্তর্ষি (তিশা)৷ রিফাত চৌধুরী এবং স্বস্তিকা দুজনেই বেশ উঁচুশ্রেণীর স্বাধীনচেতা দুজন মানুষ, তাই দুজনের সন্তান অন্তু হবার তিনমাস পরে যখন স্বস্তিকা স্কলারশিপ পেয়ে ডেনমার্কে যেতে চায়, তখন রিফাত চৌধুরী যেতে বারণ করে দেয়৷ স্বস্তিকা ব্যাপারটিকে তাই স্বামীকতৃক তার ওপর ডোমিনেশন হিসেবে ধরে নেয়, এবং সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটায়৷ দুজনের কেউই কাউকে ছাড় দেয়নি৷ এদিকে অন্তু বড় হতে থাকে রিফাত সাহেবের কাছে, যিনি স্বামী হিসেবে ব্যর্থ হলেও বাবা হিসেবে বেশ সফল ভূমিকা পালন করেন, অপরদিকে স্বস্তিকাও আবার একজনকে বিয়ে করে, সংসার করে, এবং ঘুরে বেড়ায় দেশ বিদেশে৷ এই গল্পে সপ্তর্ষি বেশ একটা টার্নিং পয়েন্ট বলা যায়, যার চরিত্র পুরো গল্পটাকে একটা কমপ্লেক্...

RUNWAY || Arafat Jewel || Debashmita Saha

Image
 তারেক মাসুদের ফিল্ম দেখার প্রথম মূহুর্তে আপনার তাকে এক ইসলামোফোব মনে হবে, কিন্তু তার ফিল্মগুলো নিয়ে আপনি যত গভীরভাবে ভাববেন, আপনি বুঝবেন ব্যাপারটি আসলে তেমন নয়। তারেক মাসুদ মাদরাসার একজন ছাত্র, তাই তার বেশিরভাগ সিনেমাতে মাদরাসা জীবনের একটা ছাপ দেখা যায়, কখনও তা প্রবলভাবে, অথবা কখনও গৌণ৷ যেমন মাটির ময়নাতে এই চিত্র অনেকটা মূখ্য ছিল, কিন্তু রানওয়েতে ওতটা না। তারেক মাসুদ সবসময়ই চেয়েছেন তার সিনেমাতে সমাজচিত্র ফুটে উঠবে, বাস্তবতা ধরা দেবে। রানওয়ে সেই দিক দিয়ে একটা খুবই সাধারণের মোড়কে অসাধারণ গভীর এক সৃষ্টিকর্ম তারেক মাসুদের, যেটা দিয়ে তিনি শুধু বাংলাদেশের যুবকদের টেরোরিজমের প্রতি টেন্ডেন্সি ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন তাইই নয়, বরং তিনি "রানওয়ে" দিয়ে দেখিয়েছেন বাহিরের দেশে আমাদের প্রবাসীদের দুর্দশা, ধনী - দরিদ্রের শ্রেণীবৈষম্য, ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে চড়াহারে সুদ নিয়ে প্রকৃত অর্থে গরীবকে আরও গরীব করার কৌশল সহ আরও অনেক কিছু। পুঁজিবাদের প্রবল থাবায় দুই পোলার শ্রেণীর মানুষ ক্রিয়েট হয়, ধনী এবং দরিদ্র শ্রেণী। নিজেদের অর্থ এবং দরিদ্রদের কঠোর পরিশ্রমকে পুঁজি করে গড়ে উঠে উচ্চবিত্ত শ্রেণী, অথচ তাদের অত্যাচ...

রোদ মেখো সূর্যমুখী ।। দেবস্মিতা সাহা

Image
  “রোদ মেখো সূর্যমুখী” দেখার পর আপনি মাথায় একটা ভোঁতা যন্ত্রণা অনুভব করবেন।  আপনার মনে হবে আপনার চারপাশটা হলুদ হয়ে যাচ্ছে - আপনার হাতের বইটা হলুদ, কাল মধ্যরাতে গাওয়া গানটা হলুদ, এমনকি আকাশটাও হলুদ। এক পর্যায়ে আপনি বিশ্বাস করতে শুরু করবেন - “বেদনার রঙ হলুদ!” তখন আপনার মনে হতে পারে - আপনি বুঝি ফানুস! এটা ভেবে  যেই না আপনি ওড়ার চেষ্টা করতে যাবেন, তখনই বুঝতে পারবেন - আপনি ফানুস নন! আমার বা আপনার পক্ষে ফানুস হওয়া সম্ভব নয়! যান্ত্রিকতার এই শহরে আমরা কমবেশি সবাই বিচ্ছিন্ন। “রোদ মেখো সূর্যমুখী” প্রচণ্ড রকমের বিচ্ছিন্ন একজন তরুণকে নিয়ে, যার নাম - ফানুস। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে পাশ করে সামনে থাকা উজ্জ্বল ক্যারিয়ারের তোয়াক্কা না করে নিজের স্বাধীন সত্তাকে প্রাধান্য দিয়ে ফুটপাতে পুরানো বইয়ের ব্যবসা শুরু করার মতো সাহসী, কিন্তু বোধহয় সেজন্যেই ভীষণ শূন্য আর নিঃসঙ্গ! এই নিঃসঙ্গতার এক বিকেলে হঠাৎ ফানুস তিতিরের প্রেমে পড়ে। কিন্তু ফুটপাতের বইয়ের ব্যবসায়ীর গুলশানের সম্ভ্রান্ত বিবাহিত নারীর প্রেমে পড়তে নেই। কিন্তু ওই যে,”প্রেমে তো মানুষ ইচ্ছে করে পড়ে না ... প্রেম ঘটে যায়!” তবু শূন্য...

THE PRESS || Arafat Jewel || Debashmita Saha

Image
শান্তিপূর্ণ পৃথিবী কনসেপ্ট দিয়ে আমরা কি বুঝি, এই প্রশ্নটা যখন কোনো মানুষকে করা হবে, তার উত্তরে হয়তবা আসবে যে পৃথিবীতে দারিদ্র্যের পীড়ন নেই, যেখানে বৈষম্যের থাবা নেই, যেখানে রয়েছে শুধুই সুখ, শুধুই পজিটিভিটি৷ এরকম একটা পৃথিবী হয়তো সবার কাছেই আকাঙ্খিত, তবে পৃথিবীর সব পজিটিভিজমেরও যে একটা নেগেটিভিটি থাকতে পারে, সেই ব্যাপারটি আমরা মাঝে মাঝে ভুলে যাই৷ যাইহোক, দি প্রেসে মাসুদ হাসান উজ্জ্বল এমনই একটি কমিউনিজম-বেইজড শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে দেখতে চেয়েছেন, বলে গেছেন সেরকম ধ্যানধারণাসম্পন্ন এক বিপ্লবী তরুণের গল্প, যে তার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় একটা প্রেস প্রতিষ্ঠা করে, যেখানে সেই'ই সম্পাদক, সেই'ই রিপোর্টার আবার সেই'ই এডিটর, যেখান থেকে দি গুড নিউজ নামের একটি পত্রিকা সে ছাপে, যার খবরগুলোর কোথাও কোনো দুঃসংবাদ থাকে না৷ আফরান নিশো সেই তরুণটির চরিত্রে অভিনয় করে৷ সে বেশ ইন্ট্রোভার্ট টাইপের একজন মানুষ, তার পত্রিকা বিলি করা বাদে খুব একটা বের হয় না, মানুষজনের সাথে সে খুব একটা কথা বলে না, বরং মানুষকে সে ভয় পায়৷ আফরান নিশো তার চাপা দাড়ি আর চমৎকার অভিনয় দিয়ে এমন গুরুগম্ভীর চরিত্রে বেশ মানিয়...

CONTRACT || A Movie Review from Debashmita Saha

Image
বাংলাদেশের বিখ্যাত মৌলিক থ্রিলার লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীনের 'কন্ট্রাক্ট' অবলম্বনে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভ অরিজিনালে গত মার্চে মুক্তি পেয়েছে ওয়েব সিরিজ - “কন্ট্রাক্ট”।  এই সিরিজের অন্যতম প্রধান চরিত্র বাস্টার্ড মূলত পেশাদার কন্ট্রাক্ট কিলার। অমূল্য বাবুর  অনুরোধে বাস্টার্ড ব্ল্যাক রঞ্জুকে শেষ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। ব্ল্যাক রঞ্জুকে খুঁজে বের করার মিশনের অংশ হিসেবে খুন, অ্যাকশন, সাসপেন্স - জুড়ে থাকে পুরো সিরিজ জুড়ে। ব্ল্যাক রঞ্জুর সাগরেদদের এক এক করে খুঁজে বের করে ব্ল্যাক রঞ্জু পর্যন্ত পৌঁছানোর এই মিশনে আকস্মিকভাবে জড়িয়ে পড়ে অতি সাধারণ পরিবারের মেয়ে - উমা। এসব কিছুর পেছন থেকে কলকাঠি নাড়তে থাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, মতবিরোধ আর বিশ্বাসঘাতকতা। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রথিতযশা অভিনেতাদের একটা বড় অংশকে দেখা গেছে এই ওয়েব সিরিজে। পাকা অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর অভিনয় নিয়ে সত্যিই কিছু বলার নেই। ব্ল্যাক রঞ্জুর চরিত্রে তিনি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন চমৎকারভাবে। বাস্টার্ডের চরিত্রে আরিফিন শুভর অভিনয়ও ছিল বেশ পরিণত। জাকিয়া বারী মমকে এই সিরিজে বেশ নতুন ভূমিকায় দেখা যায়। ব্ল্যাক রঞ্জুর স্ত্রীর চরিত্রে ...