Posts

স্বর্গের নীচে মানুষ- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় || রিভিউ- তাইমুন তারিন

Image
মানব জীবনেকাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ-অহংকার-মাৎসর্য (হিংসা) কে ষড়রিপু বলে। ষড়রিপু'র মধ্যে অন্যতম রিপু হলো কাম। অন্যান্য রিপু গুলো চাইলেই আপনি কন্ট্রোল করতে পারবেন। যেমন ধরেন আপনি মনে করলেন আপনি মিথ্যা বলা ছেড়ে দিবেন আজ থেকে, আপনি চাইলেই এটা পারবেন। কিংবা ধরেন আপনি ভাবলেন, আপনি আপনার ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করবেন আজ থেকে, এটাও আপনি সহজে পারবেন। কিন্তু কাম সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না এবং এর পরিনতি ভয়াবহ। গল্পটির শুরুতে বেশ সাদামাটা-ই ছিলো। যেখানে পাহাড়ের উপর বিখ্যাত এক মন্দিরে আরোহন করতে গিয়ে ঝড় বৃষ্টির কবলে পড়ে নদীর ভয়াবহতার দরুন আটকা পড়ে যায় এক দম্পতি। তারা যে মন্দির টি তে পৌঁছাতে চেয়েছিলো, সে মন্দিরটিকে নিয়ে তথাকথিত বহু লোকগল্প প্রচলিত রয়েছে। স্থানীয় লোকের ভাষ্যমতে মন্দিরটি স্বর্গতুল্য। স্বর্গের কাছাকাছি পৌঁছে যায় যারা, তারা আর ফিরে আসে না- এমন অনেক লোকগল্প শুনেও স্ত্রী টি দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ সেই স্বর্গ মন্দির জয়ের। যাত্রাপথে প্রচন্ড ঝড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোর দরুন ফেরার পথ হয়ে যায় এবং তারা এক লোকের নিকট আশ্রয় লাভ করে। স্ত্রী টি ছিলো ভীষণ সুন্দরী। আর আশ্রয়দাতা ছিলেন শূন্য একজন মানুষ, যে কিনা সংগ্রাম ব্যতী...

মহীনের ঘোড়াগুলির আবেদন ফুরায় না!

Image
  “মহীনের ঘোড়াগুলি ঘাস খায়,কার্ত্তিকের জ্যোৎস্নার প্রান্তরে " - জীবনানন্দ দাসের এক কবিতার লাইন। এই কবি নিজে যেমন তাঁর সময়ের বহু আগে চলে এসেছিলেন বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে, তাঁর কবিতা থেকে নাম নেওয়া “মহীনের ঘোড়াগুলি” ব্যান্ডের অবস্থাও  ছিল ঠিক তেমন। সত্তরের দশকে কলকাতার বুকে জন্ম নেয় মহীনের ঘোড়াগুলি। নাম থেকে শুরু করে সৃষ্ট গান-সবেতেই তাদের ছিলো আলাদা পরিচয় আর স্বাদ।  দুর্দান্ত সব গান নিয়ে হাজির হয়েছিলেন গৌতম চট্টোপাধ্যায়, সাথে ছিল তাঁর দল।  অথচ এই ব্যান্ড কিনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো গুটিকয়েক অনুষ্ঠানের পর গ্রহণযোগ্যতা না পাওয়ার কারণে! সময়টা ছিলো ফিল্মি গানের যুগ। হেমন্ত, আশা ভোসলের মত শিল্পীদের গান তখন খুব চলতো। সেই ধারা থেকে সম্পুর্ণ আলাদা ছিলো মহীনের ঘোড়াগুলি। ব্যান্ডটির বিশেষত্ব হলো - তাদের সমসাময়িক অন্যান্য গানগুলোকে বলা যায় “সেই সময়ের গান”। মহীনের ঘোড়াগুলি-র গানের ব্যাপারে তা খাটে না।   বর্তমান তরুণ প্রজন্ম মোটামুটি কলেজে “মহীনের ঘোড়াগুলি” না শুনলেও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কখনো না কখনো লুপে এই ব্যান্ডের গান শোনে, আড্ডা থেকে শুরু করে গ্র্যাজুয়েশন সেরেমনিতে গাওয়া হয় তাদে...

"না কমলা না মেহেরজান" কে আমি ব্যক্তিগত দিক থেকে যেভাবে দেখি || Ankon Dey Animesh || Nurul Alam Atique || Joya Ahsan || Ahmed Rubel

Image
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "মুসলমানির গল্প" অবলম্বনে নির্মিত নাটক "না কমলা, না মেহেরজান" বেশ কিছু কারণে আমার মনে অনেক দিন বিরাজ করবে। পরিচালক নুরুল আলম আতিক গল্পের প্রেক্ষাপট সময়েই নাটকটির টাইমলাইন বানিয়েছেন। সম্ভবত এই গল্প নিয়ে কাজটা করতে তিনি স্পেসিফিক্যালি উৎসুক ছিলেন, সেসব নিয়ে আলাপ একটু পরেই দিচ্ছি!  Written and Edited by:  Ankon Dey Animesh এই কাজটাকে আমি আর কিছুর জন্য মনে না রাখলেও এর মিউজিক টিমের জন্য মনে রাখব। বা পুরো মিউজিক কম্পোজিশন বাদ দিলেও শেষের "প্রেম নগর কা অন্ত না পায়া" এর জন্য মনে রাখব। কবির সাধুর এই কবিতাকে শুরুতে সাহানা দত্তগুপ্তার নিকট শুনেছিলাম আমি। তিনি কবিরের বেশ কিছু কবিতাকে ইন্ডিয়ান ক্লাসিক্যালের ১০টি ঠাটে ফেলে এলবাম বের করছিলেন, এবং এই কবিতাকে সম্ভবত ইমন রাগেই তৈরী করেছিল তারা। কিন্তু "না কমলা, না মেহেরজানে" ভৈরব বা ভৈরবীতেই (বা তৌড়ী) তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে হয়। তবে যেই ঠাটেই করুক নাহ কেন, আমার অসাধারণ লেগেছে। পুরো কাজের শেষে যখন এই কম্পোজিশন আমার কানে আসলো, আমি বিভোর হয়ে গেলাম এক অন্যরকম স্বপ্নে! শেষের দিকের এই কম্পোজিশন পুরো...

ডুব সাঁতার || জটিল সম্পর্ক, সহজ গল্প, অনবদ্য গান ও অভিনয় || Nurul Alam Atique || Ankon Dey Animesh

Image
  কিছু অপূর্ণ সম্পর্কের অপূর্ণ গল্প দেখতে চান ৯০ মিনিট ধরে? অথবা একটা শহরের মধ্যে একটা সংসারের হাসিকান্নার আড়ালে নিজেকে ডুবিয়ে রাখতে চান? সম্পর্ক পরিবর্তনের সাথে সাথে পারিপার্শ্বিকের পরিবর্তন, পরিবার-চিন্তন, এবং স্ব-পরিবর্তনের গল্পের শেষ অংশে বিষাদ অনুভূতি নিয়ে এন্টারটেইন্ড হতে চান? দেখতে চান যেকোন সময়ে আসা প্রেম এবং তার জন্য অন্য মানুষ পরিবর্তন হওয়ার আশায় স্বপ্ন বাঁধা? দেখে ফেলুন ডুব সাঁতার।  Written and Edited By:  Ankon Dey Animesh ডুব সাঁতার এর গল্পটাই বা গল্প বলে যাওয়াটাই আসল ছিল, তাই তা নিয়ে কিছু বলব নাহ। সহজ সরল ভাবে একটি জটিল সম্পর্কের গল্প। অনুরোধ থাকবে দেখে নেওয়ার। পরিচালক নুরুল আলম আতিক স্ক্রিনপ্লে নিয়ে খেলেছেন দারুণভাবে। বর্তমানের সাথে ক্ষণে ক্ষণে অতীত এনে ইমোশনাল বিল্ডাপ করেছেন ভালোভাবে। ছিল মতিয়া বানুর লেখা যথাযথ সংলাপ যাকে অধিক রঞ্জিত বা অরঞ্জিত- কোনটাই মনে হয় নি। পরিবারের অনটনের মাঝে ছেলের না বোঝা, আবার মেয়ের সবটা বুঝে নেওয়া- সব যেন যথাযথভাবে সংলাপগুলোর মধ্য দিয়ে উঠে আসছিল। হাটে বারবার একই দাম জিজ্ঞেস করা জিনিস দেখার সময়ে, কমিয়ে রাখা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ...

ফসিলের কান্না ।। আরাফাত জুয়েল ।। দেবস্মিতা সাহা

Image
  বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক অনেক সিনেমাটোগ্রাফি বানানো হয়েছে, ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে, ভিন্ন ভিন্ন গল্পে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের নানা দিক। তবে এসবের মাঝে নতুনত্বের বেশ ঘাটতি লক্ষ করা যায়। ফসিলের কান্না সেদিক থেকে পুরোপুরি মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক মনে হয়নি আমার। মুক্তিযুদ্ধ এখানে একটা প্রেক্ষাপট বটে, কিন্তু এটি মূলত একটি নিরন্তর ভালোবাসা এবং প্রতিশোধপরায়ণতার গল্প। রাতের অন্ধকার যেন দুনিয়ার সকল প্রতিকূলতা এবং নৃশংসতার মঞ্চ। কথাটা সবসময় সত্যি না জানি তবে বেশিরভাগ সিনেমাটোগ্রাফি বা সাহিত্যে আমরা সেটাই দেখতে পাই। তেমনি এক ঘোর রাতে তোফাজ্জল হোসেনের সুন্দর সংসারে অন্ধকার নেমে আসে। তার বাড়িতে হানা দেয় কিছু মিলিটারি এবং রাজাকার, তারা তোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী শেফালীকে ধরে নিয়ে গিয়ে বাঁধে শেফালীরই লাগানো শিলকড়ই গাছের সাথে, এবং সেখানে তাকে ধর্ষণ এবং অতঃপর হত্যা করে। এই পুরো ঘটনা ঘটে যুবা তোফাজ্জল হোসেনের চোখের সামনে, সে সেদিন কিছুই করতে পারে না মানবীয় ভয় এবং আতঙ্কের জন্যে। কিন্তু এই বেদনা সে ধরে রাখে, তাঁর স্ত্রীর এই করুণ পরিণতির কষ্টে সেই শিলকড়ই গাছকেই সে মেনে নেয় নিজের স্ত্রী হিসেবে, তা...